১৪ই জুন, ২০১৫। এই দিনটি ছিল বিশ্বরক্তদাতা দিবস, যা প্রতিবছর সারা বিশ্বে স্বেচ্ছায় রক্তদানের গুরুত্ব ও রক্তদাতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য উদযাপন করা হয়। সে বছর, বরিশাল সরকারি সৈয়দ হাতেম আলি কলেজে টিম বিবিডিসির উদ্যোগে এক বিশেষ কেক কাটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। এ আয়োজনটি শুধুমাত্র একটি অনুষ্ঠান ছিল না; এটি ছিল স্বেচ্ছাসেবীদের এক মহামিলন, রক্তদাতাদের সম্মাননা এবং থ্যালাসেমিয়া রোগীদের পাশে দাঁড়ানোর এক অনন্য প্রয়াস।
উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সরকারি সৈয়দ হাতেম আলি কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ মহোদয়, প্রফেসর ইমানুল হাকিম। তার অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য উপস্থিত সবাইকে স্বেচ্ছায় রক্তদানের প্রতি আরও বেশি আগ্রহী করে তোলে। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এসিস্ট্যান্ট রেজিস্ট্রার জনাব বাহাউদ্দিন গোলাপ, যিনি স্বেচ্ছায় রক্তদানের সামাজিক গুরুত্ব সম্পর্কে দারুণ একটি বক্তব্য প্রদান করেন। তাদের উপস্থিতি ও সমর্থন এই আয়োজনকে আরও তাৎপর্যপূর্ণ করে তোলে।
উক্ত অনুষ্ঠানে নিয়মিত রক্তদাতাদের পাশাপাশি থ্যালাসেমিয়া রোগী এবং তাদের পরিবারকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তাদের উপস্থিতি পুরো আয়োজনকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে। রোগী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা রক্তদাতাদের ধন্যবাদ জানান, কারণ তাদের স্বেচ্ছায় রক্তদানের মাধ্যমেই অনেক রোগী জীবন ফিরে পেয়েছে। এই মুহূর্তগুলো ছিল আবেগপ্রবণ, যেখানে রক্তদাতা এবং রোগীর মধ্যে এক বন্ধন সৃষ্টি হয়।
অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে টিম বিবিডিসি তাদের ভবিষ্যতে অসহায় মানুষদের নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা এবং আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে রক্তদানে উদ্বুদ্ধ করার পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। নিয়মিত রক্তদাতাদের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জন্য একটি সংগঠিত রক্ত সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিকল্পনাও তুলে ধরা হয়।
এই আয়োজনটি ছিল কেবলমাত্র একটি অনুষ্ঠানের চেয়ে অনেক বেশি কিছু। এটি ছিল এক মানবিক উদ্যোগ, যেখানে রক্তদানের মাধ্যমে মানুষের জীবন রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক, রক্তদাতা, অতিথি এবং রোগীদের একসাথে নিয়ে এমন একটি আয়োজন ভবিষ্যতে আরও সচেতনতা বৃদ্ধি করবে এবং রক্তদানের প্রতি মানুষের আগ্রহ আরও বাড়াবে।
বিশ্বরক্তদাতা দিবসের এই আয়োজন আমাদের মনে করিয়ে দেয়, “রক্ত দিন, জীবন বাঁচান।”